বিগত আওয়ামী লীগের সময় অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টি কোনো নিয়মভঙ্গ করেনি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে দলটির মহাসচিব বলেন, ‘আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ) মোতাবেক জাতীয় পার্টি কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করেনি। আওয়ামী লীগের সময়ে ভোটে অংশ নেওয়ার জন্য বিতর্কিত হলে ইসলামী আন্দোলন ও বিএনপিরও একই অবস্থা হওয়ার কথা। সব দলকে নিষিদ্ধ করলে, কাকে নিয়ে নির্বাচন করবে ইসি?’
গণঅভ্যুত্থানের মুখে বিদায় নেওয়া আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় ২০১৪ ও ২০২৪ সালের দুটি নির্বাচন বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো বর্জন করে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে সব দল অংশ নিলেও এটি ঘিরে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ রয়েছে। তিনটি নির্বাচনেই জাতীয় পার্টি অংশ নেয় এবং প্রধান বিরোধী দল হিসেবে সংসদে দায়িত্ব পালন করে।
আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে দলটিকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গত ১২ আগস্ট রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এনসিপির মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের বি-টিম ইতোমধ্যে চলে এসেছে। এদের প্রতিহত করা হবে। মুনাফিক জাতীয় পার্টি, যারা আওয়ামী লীগ যা বলতো তাই করতো, কিভাবে তারা হুংকার দেয়?’
সিইসির সঙ্গে বৈঠকে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে জাতীয় পার্টি। দলটির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘বর্তমান সরকার নিরপেক্ষ নয়। নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ দেখতে চায় সব দল।’
জাতীয় পার্টির এই নেতা আরও বলেন, ‘সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন কমিশন ডাকবে, তাদের কথা শুনবে এবং একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করবে বলে আমরা প্রত্যাশা করি। ইসি সুষ্ঠু নির্বাচন করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরিতে সব দলের সহযোগিতা লাগবে।’
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘জিএম কাদের ছাড়া অন্য কারো জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হওয়ার সুযোগ নেই। চেয়ারম্যানের সম্মতিতে কাউন্সিল হবে এটা গঠনতন্ত্রে স্পষ্ট আছে। এর বাইরে কোনো বৈধ কাউন্সিল হতে পারে না। বহিষ্কৃতরা কাউন্সিলে অংশ নিয়েছে, এগুলো বিব্রতকর। এরশাদের লাঙ্গল জিএম কাদেরের কাছেই থাকবে।’
এদিকে বিকালে সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নিবন্ধন আবেদন থেকে বাদ পড়া নতুন দল বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টির নেতারা। দলটির দাবি, অযৌক্তিকভাবে তাদের আবেদন খারিজ করা হয়েছে। ইসি থেকে এ নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হচ্ছে না৷ বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হবেন বলেও জানান দলটির নেতারা।